বাইনান্স কি? - বাইনান্স থেকে আয়
বর্তমানে বাইনান্স এর মত ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জগুলো ট্রেন্ডিংয়ে চলছে। বাইনান্স এর সম্পূর্ণ বিস্তারিত জানতে মানুষজন গুগলে সার্চ করে থাকে "বাইনান্স কি? - বাইনান্স থেকে আয়" এই নিয়ে। কারণ এই টপিকটি (বাইনান্স কি? - বাইনান্স থেকে আয়) সকলের কাছে কৌতুহল পূর্ণ।
তাই আপনিও যদি বাইনান্স নিয়ে কৌতূহল হয়ে থাকেন এবং এর আদ্যপ্রান্ত সম্পূর্ণ জানতে চান, তবে এই (বাইনান্স কি? - বাইনান্স থেকে আয়) পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য।
ভূমিকা
বর্তমানে সারা বিশ্বে বাইনান্স অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ হয়ে উঠেছে। অনেকের মতে বাইনান্স বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম। ২০১৭ সালে চীনে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরে তা থাইল্যান্ডে স্থানান্তর করা হয় ২০১৯ সালে চীন সরকারের চাপের কারণে। বর্তমানে ১৮০ টির ও বেশি দেশে বাইনান্স তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বাইনান্স একাউন্ট কি?
বাইনান্স একাউন্ট এর মাধ্যমে আপনি ক্রিপটোকারেন্সি কিনতে পারবেন, বিক্রি করতে পারবেন, ট্রেড করতে পারবেন, আবার কাউকে ধারও দিতে পারবেন। তবে এর জন্য প্রয়োজন হল একটি বাইনান্স একাউন্ট। আর এই বাইনান্স একাউন্টটি খুলতে আপনাকে আপনার নাম,ইমেল ঠিকানা, পাসওয়ার্ড এবং আপনার ফোন নাম্বারটি প্রদান করতে হবে।
Binance wallet কি?
বাইনান্স অ্যাকাউন্ট খোলার পর তারা আপনাকে একটি ডিজিটাল ওয়ালেট প্রদান করে এবং একে Binance wallet বলা হয়। এই ওয়ালেটের মাধ্যমে আপনি আপনার ট্রেড কৃত বা আদান-প্রদান কৃত সকল ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি সংরক্ষণ বা জমা করতে পারবেন। এটি একটি ব্রাউজার ভিত্তিক wallet এবং এটি ব্যবহার করা সহজ।
Read More: ট্রেডিং মানে কি - ট্রেডিং কিভাবে করব
তবে মোবাইল wallet এর মত একে নিরাপদ মনে করা হয় না। বাইনান্স মোবাইল ওয়ালেটও রয়েছে যা বাইনান্স এর নিজস্ব অ্যাপ এর মাধ্যমে ব্যবহার করে যায়। ব্রাউজার ভিত্তিক wallet এর চেয়ে মোবাইল ওয়ালেট বেশি নিরাপদ বলে মনে করা হয়ে থাকে।
বাইনান্স ট্রেডিং কি?
আপনি ইতিমধ্যেই জেনেছেন যে বাইনান্স ট্রেডিং দ্বারা কি কি করা যায়। আপনি এতে ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনতে পারবেন, বিক্রি করতে পারবেন এবং ট্রেড করতে পারবেন। আর এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় বাইনান্স ট্রেডিং। এতে দুই ধরনের ট্রেডিং অপশন রয়েছে। একটি হল ফিউচার ট্রেডিং, এবং আরেকটি হল অপশন ট্রেডিং। আপনি এর মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি ফিউচার ট্রেডিং করতে পারবেন এছাড়া অপশন ট্রেডিং করার সুযোগ ও রয়েছে।
ফিউচার ও অপশন কি?
একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণের সম্পদ কেনা বা বিক্রি করার চুক্তির প্রক্রিয়াকে বা ট্রেডিং পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে ফিউচার ট্রেডিং। আর আপনি যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট মূল্যে কোন সম্পদ বিক্রি বা কেনার অধিকার অর্জন করেন তখন তাকে বলা হয় অপশন ট্রেডিং।
বাইনান্স ফিউচার ট্রেডিং
বাইনান্স ফিউচার ট্রেডিংকে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রেডিং পদ্ধতি বলা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি ফিউচার ট্রেডিং করতে পারবেন। তবে ফিউচার ট্রেডিং করার আগে এর সকল ঝুঁকি সমূহ আপনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ট্রেডিং করতে হবে।
Binance কিভাবে কাজ করে?
আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন যে বাইনান্স হলো একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ ডিজিটাল প্লাটফর্ম। এর মাধ্যমে এর ব্যবহারকারীরা ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনতে পারে, বিক্রি করতে পারে, ট্রেড করতে পারে বা ধার নিতে পারে আর এর মাধ্যমে অর্থাৎ এই লেনদেনের মাধ্যমে বাইনান্স তার কার্য সম্পাদন করে থাকে। অনেকের মধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনের জন্য বাইনান্স অত্যন্ত নিরাপদ এবং এতে দ্রুত ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন করা যায়।
বাইনান্স একাউন্ট খোলার নিয়ম
বাইনান্স একাউন্ট খোলার বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। ধাপগুলো নিম্নে উল্লেখ করা
হলোঃ
- প্রথমে বাইনান্স এর ওয়েবসাইট বা অ্যাপটিতে যেতে হবে।
- তারপর ক্রিয়েট একাউন্ট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- সেখানে ইমেইল ঠিকানা পাসওয়ার্ড এবং একটি otp কোড চাইবে, সবগুলো পূরণ করতে হবে।
- পূরণ করা শেষ হয়ে গেলে আবার নির্দিষ্ট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- আপনার ইমেইলে একটি নিরাপত্তা কোড যাবে এবং সেটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসালেই
- ক্রিয়েট হয়ে যাবে আপনার বাইনান্স একাউন্ট।
বাইনান্স login
বাইনান্স একাউন্ট খোলার পরে আপনি আপনার যে মোবাইল নাম্বার বা জিমেইল দিয়ে বাইনান্স একাউন্টটি খুলেছিলেন, সেই ইমেইলটি বা মোবাইল নাম্বার দিয়ে তারপর আপনার পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনি আপনার বাইনান্স একাউন্টে সহজেই login করতে পারবেন।
বাইনান্স কি বাংলাদেশে বৈধ?
বাংলাদেশ থেকে বাইনান্স ট্রেডিং করা যায় অর্থাৎ এটি বাংলাদেশ থেকে ট্রেডিং করা সমর্থন করে বা বাংলাদেশ থেকে বাইনান্স ট্রেডিং করা সম্পূর্ণ বৈধ। তবে বাংলাদেশ সরকার দ্বারা বাইনান্স ওয়েবসাইট টি স্বীকৃত নয় বা অনুমোদিত নয়।
বাইনান্স এ ট্রেড করা যাবে?
বাইনান্স একাউন্ট খোলার পর আপনি খুব সহজেই বাইনান্স ট্রেডিং শুরু করতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখবেন, বাংলাদেশ সরকারের সকল বিধি-নিষেধ মেনে যেন আপনি ট্রেড করতে পারেন।
বাইনান্স কি বাংলাদেশে কাজ করে?
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে বাইনান্স বাংলাদেশ সরকার কিত্তিক স্বীকৃত বা অনুমোদিত নয় তবে বাংলাদেশ থেকেও বাইনান্স ট্রেডিং করা যায়।
Read More: বাংলাদেশের সেরা আতর - আতরের নাম ও দাম
বাইনান্স কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?
২০১৭ সালে বাইনান্স প্রতিষ্ঠিত হয় চীনে।
বাইনান্স কি চীনের মালিক?
বাইনান্স হল একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি। এর যাত্রা ২০১৭ সালে চীনে হলেও পরবর্তীতে তা সিঙ্গাপুরের নিবন্ধন করা হয়।
বাইনান্স থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার
হ্যাঁ, অবশ্যই আপনি বাইনান্স থেকে বিকাশে মানি ট্রান্সফার করতে পারবেন। আপনি আপনার ট্রেডিং এর লভ্যাংশ বিকাশের মাধ্যমে আপনার ফোনে ট্রান্সফার করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে প্রথমে বাইনান্স এর ওয়েবসাইট বা এর অ্যাপটিতে যেতে হবে। সেখানে বিকাশের অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। তারপর আপনার বিকাশ একাউন্টের নাম্বার পাসওয়ার্ড সকল কিছু দিয়ে ট্রান্সফার বাটনটি প্রেস করে ট্রান্সফার নিশ্চিত করতে হবে।
বাইনান্স বিনিয়োগ করা কি নিরাপদ?
বাইনান্স একটি নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম হলেও ক্রিপ্টোকারেন্সি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বাইনান্স বিনিয়োগ করার পূর্বে ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে আপনাকে সম্পূর্ণ অবগত হতে হবে।
FAQ: বাইনান্স কি? - বাইনান্স থেকে আয়
1. বাইনান্স কি?
উত্তর: বাইনান্স একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম যা ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল মুদ্রা যেমন বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, এবং আরও অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনতে, বিক্রি করতে এবং বিনিময় করতে দেয়। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ হিসেবে পরিচিত।
2. বাইনান্স থেকে কীভাবে আয় করা যায়?
উত্তর: বাইনান্স থেকে আয়ের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যেমন:
- ক্রিপ্টো ট্রেডিং: দাম ওঠানামা করে মুনাফা করা।
- স্টেকিং: নির্দিষ্ট ক্রিপ্টোকারেন্সি ধরে রাখার মাধ্যমে আয়।
- লিকুইডিটি প্রদান: বাইনান্স লিকুইডিটি পুলে যোগদান করে সুদ অর্জন।
- বাইনান্স সেভিংস: ফিক্সড ডিপোজিট বা ফ্লেক্সিবল সেভিংসে সুদ পাওয়া।
3. বাইনান্স একাউন্ট খুলতে কত সময় লাগে?
উত্তর: বাইনান্স একাউন্ট খোলা খুব সহজ। কয়েক মিনিটের মধ্যে সাইন আপ করা যায়। তবে একাউন্ট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক ঘণ্টা থেকে ২-৩ দিন সময় লাগতে পারে।
4. বাইনান্স কি বাংলাদেশে ব্যবহার করা যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, বাইনান্স বাংলাদেশে ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশ থেকে ব্যবহারকারীরা বাইনান্সের মাধ্যমে ক্রিপ্টো ট্রেডিং এবং অন্যান্য ফিচার ব্যবহার করতে পারে।
5. বাইনান্স কি নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম?
উত্তর: বাইনান্স সাধারণত একটি নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যেকোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মতোই নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে, তাই দ্বৈত সুরক্ষা (2FA) এবং সতর্কতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ।
6. বাইনান্স ফি কেমন?
উত্তর: বাইনান্সের ট্রেডিং ফি সাধারণত 0.1%। তবে বাইনান্স কয়েন (BNB) ব্যবহার করলে ট্রেডিং ফি আরও কমে যায়।
7. বাইনান্স থেকে বিটকয়েন কিভাবে বিক্রি করবেন?
উত্তর: বিটকয়েন বিক্রি করতে আপনাকে বাইনান্সে লগইন করে "ট্রেড" অপশনে যেতে হবে। সেখান থেকে "বিক্রি" অপশন নির্বাচন করে বিটকয়েনের পরিমাণ ও মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
8. বাইনান্স রেফারেল প্রোগ্রাম কি?
উত্তর: বাইনান্স রেফারেল প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি অন্যদের বাইনান্সে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন এবং তাদের ট্রেডিং ফি থেকে একটি কমিশন উপার্জন করতে পারেন।
9. বাইনান্স থেকে টাকা তুলতে কত সময় লাগে?
উত্তর: বাইনান্স থেকে টাকা তুলতে সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে, তবে কখনো কখনো ব্যাঙ্ক বা নেটওয়ার্কের কারণে সময় বেশি লাগতে পারে।
10. বাইনান্স অ্যাপ কি সহজে ব্যবহার করা যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, বাইনান্স অ্যাপ সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং এটি মোবাইল ও ডেস্কটপ উভয় প্ল্যাটফর্মেই সহজেই কাজ করে। নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপটিতে বিভিন্ন নির্দেশিকা এবং সহায়ক টুল রয়েছে।
Follow this website's rules and regulations before commenting.Click here Every comment will be checked.
comment url